বর্তমানে অনেক মানুষ আছে যারা মোটা হতে চায়। কারন রোগা পাতলা শরীর দেখে অনেকে হাসাহাসি করে। বিভিন্ন রকমের ঠাট্টার শিকার হতে হয় তাকে। কিন্ত বেশি মোটা হওয়ার একদম ভাল নয়। নিজের কাছেই অস্বস্তি বোধ হয়। আবার একদম চিকন থাকাও বেমানান। কারন বেশি চিকন থাকলে অনেকের কাছে নানা ধরনের কথা শুনতে হয়। যার প্রভাবে তারা নিজেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। অনেকে আছে যারা কিনা না চাইতেও চিকন। মানে কোন ভাবেই তারা মোটা হওয়ার পারছে না। তাই তারা বিভিন্ন রকম উপায় অবলম্বন করে থাকে শুধু মাত্র তাদের ওজন বাড়ানোর জন্য। চাইলেই যদি সবাই নিজেদের শরীরের ওজন বাড়াতে পারতো তাহলে পৃথিবীতে হয়তো চিকন মানুষ খুজে পাওয়া যেতো না। ওরা হয়তো জানে না কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে শরীরের ওজন বাড়ানো / মোটা হওয়ার সম্ভব। আমি আজকে আপনাদের সাথে মোটা হওয়ার সেই উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
কিন্তু অনেকেই তাদের ওজন কম থাকার কারন সম্পর্কে অবগত না। তারা নিজেরাও জানে না কেন তাদের ওজন অন্যদের তুলনায় কম। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক ওজন কম থাকার কারন।
ওজন কম থাকার কারনঃ
নানা কারনে শরীরের ওজন কম থাকতে পারে। যেমনঃ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, বিভিন্ন ধরনের নেশা পান করা, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া ইত্যাদি।
ওজন বাড়ানো বা মোটা হওয়ার ৫ টি উপায়ঃ
১. খাবার গ্রহন
এমন অনেক মানুষ আছে যারা পরিমান মত খাবার গ্রহন না করার জন্য চিকন থাকেন। তাই আমাদের বেশি করে খাবার গ্রহন করতে হবে। বেশি বলে যে পরিমানের থেকে বেশি তা না, যতটুকু দরকার ঠিক সেই পরিমানে খাবার খেতে হবে। একসাথে বেশি খাবার না খেয়ে চেষ্টা করতে হবে একটু পর পর খাবার গ্রহন করার। একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক লোকের দৈনিক ১৮০০ ক্যালরি পরিমান খাবার গ্রহন করা উচিত।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করা
পরিমিত খাদ্য গ্রহনের পাশাপাশি আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করে যেতে হবে। অনেকে ভেবে থাকে যে ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করতে হয়, কিন্তু এইটা একেবারেই একটি ভুল ধারনা। ওজন কমানোর জন্য যেমন ব্যায়াম করতে হয়, ঠিক তেমনি ওজন কমানোর জন্য ও ব্যায়াম করা যায়। ব্যায়াম মানুষকে ফিট রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাই আমাদের ব্যায়াম করার জন্য জিম এ যেতে হবে। নাহলে বাড়িতে থেকেই ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে।
৩. পুষ্টিকর খাবার গ্রহন
আমাদের শুধু মাত্র খাবার খেলেই হবে না। খাবারের তালিকায় অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। কারন পুষ্টিকর খাবার আমাদের শরীরের পুষ্টি যোগায়। তাই খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেড, প্রোটিন ও ভিটামিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে। তাই আমাদের বেশি করে শাকসবজি, ফল্মুল, দিম, মাছ, দুধ ইত্যাদি খাবার খেতে হবে। তাছাড়া ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, তেলে জাতীয় খাবার খেতে হবে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার মোটা হওয়ার জন্য অনেক উপকারি। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেয়ে ঘুমাতে হবে।
৪. পরিমিত ঘুম
শরীর সুস্থ রাখার জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়জন। আর শরীর সুস্থ না থাকলে ওজনও বাড়বে না।আমাদের প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়জন। রাত না জেগে তারাতারি ঘুমিয়ে যেতে হবে। আবার সকালে খুব তারাতারি ঘুম থেকে উঠতে হবে। তারপর হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং খালি পেটে পানি পান করতে হবে। এই কাজ গুলো আমাদের অবশ্যই সময় মত করতে হবে। তাহলে আমরা ভালো ফল পাবো।
৫. ধুমপান বা মদ্যপান থেকে বিরত থাকা
ধুমপান বা মদ্যপান আমাদের শরীরের উপর নানারকম ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এর ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের মারাক্তক ক্ষতি হয়। আর স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে আমাদের ওজন ও ঠিক থাকবে না। ধুমপান বা মদ্যপান করার ফলে আমাদের নানা রকম রোগ হয়ে থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই আমাদের ধুমপান বা মদ্যপান সারাজীবনের জন্য পরিত্যাগ করা উচিত।
মোটা হওয়ার জন্য আরো কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারেন। যেমনঃ
- একজন ভালো ট্রেইনারের পরামর্শ নিয়ে জিম করা।
- চিনি জাতীয় খাবার পরিহার করা।
- প্রসেসড জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
- সবসময় টেনশন মুক্ত থাকা।
- বেশি করে ক্যালোরি গ্রহন করা।
যদি আমরা এই নিয়ম গুলো মেনে চলতে পারি তাহলে অল্প দিনের মধ্যেই আমরা আমাদের ওজন পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবো।তাই আমাদের এই নিয়ম গুলোকে অভ্যাসে পরিনত করতে হবে।এবং নিয়মিত তা চালিয়ে যেতে হবে।